Header Ads

 

গরুর ভিটামিন ইনজেকশন



গরুর ভিটামিন ইনজেকশন, ছাগলের ভিটামিন ইনজেকশন

গরুর ভিটামিন ইনজেকশন এর নাম:

B50-Vet® Injection বা বি 50-ভেট ইনজেকশন।

উক্ত গরুর ভিটামিন ইনজেকশন এর ধরণ:

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স।

এই গরুর ভিটামিন ইনজেকশন কিভাবে এবং কতটুকু প্রয়োগ করবেন:


বি 50-ভেট ইনজেকশনটি অন্তঃসত্ত্বিক বা ইন্টারমাস্কুলার ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বড় প্রাণী (গবাদি পশু, মহিষ, ঘোড়া) -: এক সপ্তাহে প্রতিদিন তিনবার 5-10 মিলি।

ছোট প্রাণী (ভেড়া, ছাগল, কুকুর, বিড়াল): এক সপ্তাহে প্রতিদিন তিনবার 1-2 মিলি।

উল্লিখিত গরুর ভিটামিন ইনজেকশন কোথায় পাবেন:

এই ভিটামিনটি স্কয়ার কম্পানির যা বাংলাদেশের বাজারে 10 মিলি শিশি এবং 100 মিলি শিশি পাওয়া যায়।

 


 

গরুর ভিটামিন ইনজেকশন

গরুর ভিটামিন ইনজেকশন এর নাম:

Es-ADE® Injection বা এস-এডিই ইনজেকশন

উক্ত গরুর ভিটামিন ইনজেকশন এর ধরণ:

ভিটামিন এ, ডি 3 এবং ই ভিটামিন এবং খনিজ পরিপূরক।

এই গরুর ভিটামিন ইনজেকশন কিভাবে এবং কতটুকু প্রয়োগ করবেন:

ইন্ট্রামাসকুলার বা সাবকুটেনিয়াস ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

গবাদি পশু, মহিষ, ঘোড়া: 5-10 মিলি

বাছুর: 2-5 মিলি

ভেড়া, ছাগল: 2-4 মিলি

বা নিবন্ধিত ভেটেরিনারি ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত হিসাবে।

গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ।

উল্লিখিত গরুর ভিটামিন ইনজেকশন কোথায় পাবেন:

এই ভিটামিনটি বাংলাদেশের বাজারে 10 মিলি শিশি এবং 100 মিলি শিশি পাওয়া যায়।

 


গরুকে দ্রুত মোটাতাজা করতে গরু মোটাতাজাকরণ ইনজেকশন ও গরু মোটাতাজাকরণ ভিটামিন প্রদানের পদ্ধতিঃ

» সঠিক মাত্রায় খাদ্য উপাদান নিশ্চিৎ করে গরু মোটাতাজা করতে ভিটামিন মিনারেল ও খনিজের ভূমিকা ব্যাপক। ২য় ডোজ কৃমি মুক্ত করণের ৩ দিন পর থেকে অর্থাৎ ১০ম দিনে ১০ মিলি পরিমান “ক্যাটাফস জাতীয় ইঞ্জেকশ “ মাংসে প্রয়োগ করতে হবে। এই সময় “হেমাটপিন বিএস ইনজেকশন” ১০ মিলি প্রয়োগ করলে দ্রুত মাংস বৃদ্ধি পায়।

» মোটাতাজা করণের জন্যে গরুকে প্রতি সপ্তাহে ১-২ টি করে ”ক্যাটাফস ইনজেকশন” প্রয়োগ করলে মোটাতাজা করণ দ্রুত হয়।

» এছাড়া বাজারে “ডিবি প্লাস” বা “ডিবি গোল্ড” বা অনেক নামে ভিটামিন মিনারেল প্রমিক্স পাওয়া যায় যা পরিমিত মাত্রায় দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। সেই সাথে ক্যালসিয়াম সিরাপ বা ক্যালসিয়াম পাউডার বা ডিসিপি দানাদার খাদ্যে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।

» ১৫ তম দিনে ১০ মিলি ”ভিটামিন এডিই ইনজেকশন” প্রয়োগ করতে হবে এবং প্রতি ১৫ দিন অন্তর ”এডিই ইনজেকশন” দিতে হবে। ”এডিই ইনজেকশন” দিতে সমস্যা হলে সিরাপ আকারে এডিই পাওয়া যায় যা প্রতি দিন দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

» অন্য দিকে গরুকে ১৫ তম দিন থেকে প্রতি ৩ দিন অন্তর ১০ মিলি পরিমাণ জিংক সিরাপ খাওয়াতে হবে। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে ২ টি করে প্রবায়োটিক প্লাস ভেট ট্যাবলেট মোটাতাজা করণ তরান্বিত করতে ও হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে  গরুকে খাওয়াতে হবে।

» এছাড়া মাঝে মাঝে গ্যাস দূর ও খাদ্য হজমের জন্যে জাইমো ভেট পাউডার খাওয়ালে গ্যাস জনিত সমস্যা অনেকটা দূর হবে। এছাড়া খাবারের সাথে অল্প পরিমাণে খাবার সোডা মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

 

গরু মোটাতাজাকরণ করতে নিচে গরুর খাদ্য খাওয়ানোর নিয়ম ও ইনজেকশন প্রয়োগের পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-

[01]

১৫ তম দিন থেকে প্রথম পর্যায়ে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় অর্থাৎ ২০০-২৫০ গ্রাম চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে এক চা চামচ  পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে শুকনা ছোট করে কাটা ৪ কেজি খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এভাবে প্রতি দিন খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন দুইবার ইউরিয়া মিশ্রিত খড় বা ইউএমএস খাওয়াতে হবে। এটিই গরুকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম গুলোর মধ্য উত্তম পদ্ধতি। এই সময় ১৫০-২০০ কেজি ওজনের একটি গরুকে কমপক্ষে ৪ কেজি খড় ও ৫ কেজি ঘাস খাওয়াতে হবে। ঘাসের অভাবে গরুর  চাহিদা মতো সকাল ও বিকালে কমপক্ষে ৮ কেজি ইউএমএস খড় খাওয়াতে হবে। এছাড়া উন্নত খাবার ১ কেজি থেকে ধিরে ধিরে বৃদ্ধি করা শুরু করতে হবে। পাতলা পায়খানা দেখা দিলে উন্নত খাবার বা দানাদার খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে। ১৫ তম দিনে ”ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন” ১০ মিলি মাংশে প্রয়োগ করার পর ২০ তম দিনে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন ১০ মিলি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া মিশ্রিত ইউএমএস খাওয়ানোর শুরু থেকে প্রথম ৭ দিন গরুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং ছায়া যুক্ত স্থানে রাখতে হবে।

[02]

২৫ তম দিনে ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন মাংসে প্রয়োগ করতে হবে এবং ২৫ তম দিন থেকে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে দুই চা চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে ৪ কেজি শুকনো ছোট করে কাটা খড়ের সাথে মিশিয়ে বা ৩০ লিটারে বড় বালতির এক বালতি খড় তৈরি করে খাওয়াতে হবে। একি নিয়মে তৈরি করে দিনে দুই বেলা খাওয়াতে হবে। এভাবে ১০ দিন খাওয়াতে হবে। উন্নত খাবার দুই কেজি থেকে ধিরে ধিরে বাড়ানো যেতে পারে। পাতলা পায়খানা দেখা দিলে উন্নত খাবার বা দানাদার খাবার কমাতে হবে।  ২৭ তম দিনে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে।

[03]

৩৫ তম দিন থেকে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে তিন চা চামচ  পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে শুকনা ছোট করে কাটা ৪ কেজি খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। সকাল বিকাল একি ভাবে তৈরি করে মোট ৮ কেজি খড় খাওয়াতে হবে। এভাবে ১০ দিন খাওয়াতে হবে। ৩৫ তম দিনে ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে। ৩৮ তম দিনে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে।

[0৪]

৪৫ তম দিন থেকে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২-৩ মুটো গুড় বা চিটাগুড় দিয়ে তার মাঝে চার চা চামচ পরিমাণ ইউরিয়া সার দিয়ে গুলিয়ে ৪ কেজি শুকনা কাটা পলের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এই সময় এই প্রক্রিয়া কৃত খড় সকালে ৪ কেজি ও বিকালে ৪ কেজি খাওয়াতে হবে। এভাবে ৫ দিন খাওয়ানোর পর ধিরে ধিরে ইউরিয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। দ্রুত এমন পর্যায়ে নিতে হবে যেন চার কেজি শুকনা খড় বা ২০ লিটারের এক বালিতি খড়ে ১ থেকে ১.৫ লিটার পানির মাঝে ২ মুঠ বা ২০০-২৫০ গ্রাম চিটাগুড় মিশিয়ে তার মাঝে ১৫ মিলি সাইজের মুটকির চার মুটকি ইউরিয়া গুলিয়ে খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। সকালে চার কেজি খড় ও বিকালে চার কেজি খড় এভাবে প্রক্রিয়া করে গরুকে খাওয়াতে হবে। এভাবে গরু বিক্রি করা না পর্যন্ত ইউরিয়া মিশ্রিত খড় দিনে ২ বার খাওয়াতে হবে, কোন ক্রমেই সকালে ৪ ও বিকালে ৪  মোট ৮ মুটকি বা ১২০ মিলি এর বেশি ইউরিয়া এক দিনে গরুকে খাওয়ানো ঠিক নয়। প্রতি মুটকির মাপ ১৫ মিলি। তাই প্রতি দিনে ইউরিয়া খাওয়ানোর পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫ x ৮ = ১২০ মিলি। এর চেয়ে বেশি খাওয়ালে পেটে বদ হজম দেখা দিতে পারে। এই সময় থেকে গরুকে ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে বা ২০ দিনে ১ টি দেওয়া যেতে পারে। এই সময়ে প্রতিদিন সকালে একটা ও বিকালে একটা এনোরা ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে, বিক্রির আগ পর্যন্ত এটা খাওয়াতে হবে। ৫০ তম দিনে ভিটামিন এডিই ইঞ্জেকশন দিতে হবে এবং এই ইঞ্জেকশন বিক্রির আগ পর্যন্ত প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর প্রয়োগ করতে হবে।

[05]

গরুকে পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার সরবরাহ করতে হবে। খাবার পাত্রে সবসময় খাবার রাখতে হবে। প্রতি দিন খাবারের সাথে ৬০-১০০ গ্রাম লবন খাওয়াতে হবে। চাউলের কুড়া, ভাতের মাড়,  সব্জির খোসা খাওয়াতে হবে। এছাড়া পারলে ৪-৬ কেজি কাচা ঘাস খেতে দিতে হবে। দানাদার খাদ্য একবারে না দিয়ে ভিজিয়ে খড়ের সাথে মাখিয়ে দেওয়া যেতে পারে অথবা সকাল বিকাল ২ বারে ভাগ করে খাওয়াতে হবে। ভিজিয়ে খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে খড় বেশি করে খাওয়ানো সম্ভব হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। বেশি করে পানি খেলে গরুর পরিপাকে সুবিধা হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন গোবর শক্ত বা খুব ঢিলা না হয়ে যাই। মিডিয়াম নরম রাখার চেষ্টা করতে হবে সব সময়। গোবরে সমস্যা দূর করার জন্য মাঝে মাঝে খাবারের সাথে অল্প পরিমানে খাবার সোডা মিশিয়ে খাওয়াতে হবে যাতে পেটে গ্যাস না জমে। গরুর বাড়তি যত্ম হিসাবে বিভিন্ন ভিটামিক্স জাতীয় গুড়া ভিটামিন ও মিনারেল খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে, এতে ফল আরো ভালো হবে। ইউরিয়া হল এক ধরনের আমিষ যা গরুর ঘাসের অভাব অনেকাংশে পূরণ করে থাকে ফলে গরু দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইউরিয়া খাওয়ানোর দিন থেকে গরুকে নিয়মিত প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। এবং ইউরিয়া খাওয়ানো শুরুর প্রথম সাতদিন ছায়া যুক্ত স্থানে রাখতে হবে। গরুকে কখনো রোদে বাধা চলবে না। তবে সকালের রোদে বাধা যেতে পারে।

উপসংহারঃ

উপরোক্ত নিয়মে গরুকে ৩ থেকে ৫ মাস পালন করে বিক্রি করতে হবে। সাধারন্ত কুরবানী(কোরবানি) সামনে রেখে ৩-৫ মাস আগে থেকে মোটা তাজা করণ কর্মসূচি গ্রহণ করলে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। ক্যাটাফস ইনজেকশন সপ্তাহে ২ টা করে করা যেতে পারে। ঘাসের অভাবে খড় আরো বেশি করে দিতে হবে। উপরোক্ত নিয়ম কানুন ১০০-১৫০ কেজি ওজনের একটি গরুর জন্যে প্রযোজ্য। গরু ছোট বা বড় হলে খাবার অবশ্যই বাড়াতে বা কমাতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.