Header Ads

গরুর পাতলা পায়খানা বন্ধ করার উপায়

 

গরুর সাধারণ পাতলা পায়খানাঃ

অজানা কারনে বা খাবারে আশ জাতীয় উপাদানের অপর্যাপ্ততার কারণে বা অপরিষ্কার পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে গরুর পাতলা পায়খানা দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় চিকিৎসা না করালে ধীরেধীরে গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে, দূর্বল হয় এমনকি মারাও যেতে পারে।



গরুর সাধারণ পাতলা পায়খানার চিকিৎসাঃ

বাছুর ও গর্ভবতী গাভীর ক্ষেত্রে-

  • ১. সালফা-৩ (বোলাস বা ট্যাবলেট) - ৩৫ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১ টি করে এক ডোজ খাওয়ানোর ৯-১০ ঘন্টা পর আরেক ডোজ অর্থাৎ দিনে ২ ডোজ, ২য় ডোজ খাওয়ানোর ৯-১০ ঘন্টা পর অর্থাৎ পরের দিন থেকে ১ম বা ২য় ডোজের অর্ধেক পরিমাণে ৩য় ডোজ খাওয়াতে হবে, এভাবে পায়খানা কমা না পর্যন্ত দিনে ২ বার করে খাওয়াতে হবে, পায়খানা না কমলে প্রয়োজনে পরের ডোজ গুলোর মাত্রা ১ম ডোজের সমপরিমাণ করতে হবে।
  • ২. মেট্রানিডাজল ভেট (বোলাস বা ট্যাবলেট) - ২০০ কেজি ওজনের জন্য ৬ টি করে দিনে ১ ডোজ করে পায়খানা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলবে ।
  • ৩. জিংক সিরাপ - ১৫-২০ মিলি করে দিনে ২ বার, পায়খানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত।
  • ৪. Biogut পাওডার - ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
  • ৫. ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ইঞ্জেকশন ৫-১০ মিলি করে ৩ দিন প্রয়োগ করতে হবে।
  • ৬. Glucolyte vet বা Electrolyte বা গবাদিপশুর স্যালাইন - দিনে ২-৩ টা করে খাওয়াতে হবে পায়খানা না কমা পর্যন্ত।
  • ৭. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।


এঁড়ে বা বলদ গরুর ক্ষেত্রে-

  • ১. সালফা ৩ ভেট - সকাল ও বিকাল ৩৫ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১ টি  করে দিনে ২ বার করে ২ দিন, এবং ৩য় দিন থেকে অর্ধ মাত্রায় দুই বার করে পায়খানা কমা না পর্যন্ত খাওয়াতে হবে, পায়খানা ঘন হয়ে না আসলে পরের ডোজ গুলো ১ম ডোজের পরিমাণে বাড়াতে হবে।
  • ২. জিংক সিরাপ - ১৫-২০ মিলি করে দিনে ২ বার, পায়খানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত।
  • ৩. রুচিবর্ধক পাউডার যেমন, এস.আর.রুচি বা রুচিমিক্স পাওডার - ১ প্যাকেট করে দিনে ২ বার রোগ সারা না পর্যন্ত।
  • ৪. Biogut পাওডার - ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
  • ৫. Glucolyte vet বা Electrolyte বা গবাদিপশুর স্যালাইন - দিনে ২-৩ টা করে খাওয়াতে হবে পায়খানা না কমা পর্যন্ত। 
  • ৬. মেট্রানিডাজল ভেট (বোলাস বা ট্যাবলেট) - ২০০ কেজি ওজনের জন্য ৬ টি করে প্রতিদিন এক ডোজ  পায়খানা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলবে ।
  • ৭. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।



গরুর ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানার লক্ষণ ও চিকিৎসাঃ

হঠাৎ করে গরুর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ওষুধ প্রয়োগের পরেও পায়খানা নিন্ত্রনে আসে না। ১৫-২০ দিনের বেশি বা দীর্ঘদিন ধরে পায়খানা তরল থাকে। খাবারে অরুচি দেখা দেয়। এমন অবস্থাকে ডায়রিয়া বলে। এ ধরণের পাতলা পায়খানা হলে দ্রুত চিকিৎসা না করালে গরু দিনদিন শুকিয়ে যায় এবং কংকালসার হয়ে মারাও যেতে পারে।

গরুর ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানার চিকিৎসা-

  • ১. প্রতিদিন ১ থেকে ২ বার এক প্যাকেট করে এস.আর.ডাইভেট এর সাথে ১ গ্রাম করে পটাসিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট (পটাশ) মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
  • ২. প্রতিদিন ২ বার, এক প্যাকেট করে রুচি বর্ধক পাউডার যেমন রুচিমিক্স পাউডার খাওয়াতে হবে।
  • ৩. প্রতিদিন ১০০ মি.লি. করে দিনে ১ বার তরল জিংক বা জিংক লিকুইড খাওয়াতে হবে।
  • ৪. ইলেক্ট্রোলাইট ১ প্যাকেট ২০ লিটার জল বা পানির সাথে মিশিয়ে পানির পাত্রে রেখে দিতে হবে যাতে পানিশূন্যতা রোধ হয়।
  • ৫. Biogut পাওডার - ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
  • ৬. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।

উপরোক্ত ওষুধ গুলো ডায়রিয়া না সারা পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে।



গরুর ব্যালানটিডিয়াসিস পাতলা পায়খানাঃ

গরুর পানির পাত্র ও ড্রেনের পানিতে জন্মানো ব্যালানটিডিয়াম কলাই (Balantidium Coli) খাবারের সাথে অতিরিক্ত মাত্রায় অথবা দীর্ঘদিন ধরে গরুর পেটে প্রবেশ করলে পাতলা পায়খানা শুরু হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরণের পাতলা পায়খানা স্থায়ী হয়ে থাকে। এ ধরণের পাতলা পায়খানা হলুদ রং বিশিষ্ট ও দূর্গন্ধ হয়।

চিকিৎসা-
গরুর প্যারা টি.বি বা জোনস ডিজিজ হলে চিকিৎসায় ভালো হয় না। অপরদিকে ব্যালানটিডিয়াম কলাই দ্বারা পাতলা পায়খানা হলে ওষুধে কাজ করে না। এমতো অবস্থায় শুধুমাত্র কপার সালফেট (তুতে) খাওয়ালে কাজ হতে পারে। দিনে ১ বার করে ৪-৮ গ্রাম তুতে জলের সাথে মিশিয়ে একদিন পর একদিন খাওয়াতে হবে। ৩ ডোজ খাওয়ালে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।



গরুর বিপাকীয় পাতলা পায়খানাঃ

বদহজম বা বিপাকীয় কারণে দীর্ঘদিন ধরে গরুর এ ধরনের পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। এ ধরনের পাতলা পায়খানা সেরে যাওয়ার পর পুনরয় আবার শুরু হয়। এক সপ্তাহ ভালো থাকলে পরের সপ্তাহে আবার শুরু হয়। পাতলা পায়খানা বারবার সারে আর বারবার শুরু হয়। এভাবে একের পর এক চলতে থাকায় চিকিৎসা খরচ বেশি হয়ে পড়ে। খামার মালিক লাভবান হওয়ার বদলে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। সাধারণত খাদ্য সঠিক ভাবে হজম না হওয়ায় গরুর এ ধরনের বিপাকীয় পাতলা পায়খানা দেখা দেয়।

চিকিৎসা পদ্ধতি-

  • ১. রুচি বর্ধক পাউডার যেমন রুচিমিক্স ১ প্যাকেট করে দিনে ১ বার পায়খানা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাওয়াতে হবে।
  • ২. লিভারটনিক সিরাপ বা লিকুইড যেমন Livaton দিনে ১ বার করে লেবেলে থাকা পরিমাণ অনুযায়ী ১০-১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
  • ৩. জিংক সিরাপ বা লিকুইড যেমন ZS vet প্রতিদিন ১ বার ১০০ মি.লি করে খাওয়াতে হবে।
  • ৪. Biogut পাওডার - ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
  • ৫. Glucolyte vet বা Electrolyte বা গবাদিপশুর স্যালাইন - দিনে ২-৩ টা করে খাওয়াতে হবে পায়খানা না কমা পর্যন্ত।
  • ৬. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।



গরুর পাতলা পায়খানা হলে সতর্কতাঃ

গরুর পাতলা পায়খানা ব্যাকটেরিয়া ঘটিত ও জীবাণু  ঘটিত হওয়ায় পাতলা পায়খানা সংক্রমক একিটি রোগ। গরুর পাতলা পায়খানা দেখা দেওয়া মাত্র রোগাক্রান্ত গরুকে অন্যান্য গরু থেকে দ্রুত আলাদা করতে হবে নইলে সকল গরুর পাতলা পায়খানা দেখা দিতে পারে। গরুর পাতলা পায়খানা দেখা দিলে গোয়াল বা খামার জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। গরু ও খামার কে সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে পাতলা পায়খানা সহ নানারকম রোগজীবাণু থেকে গরুকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।



উপরোক্ত চিকিৎসা ও প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আশাকরি গরুর সকল প্রকার পাতলা পায়খানা দূর করা সম্ভব হবে। যে কোনো ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ মতো খাওয়ানো উচিত।  সুস্থ গরু আর লাভজনক খামার। পাতলা পায়খানা গরুর মাংস ও দুধ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই পাতলা পায়খানা দেখা দেওয়া মাত্র অবহেলা না করে দ্রুত রোগাক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাতে হবে।










জরুরী প্রয়োজনে কল করুন 01719771195












No comments

Powered by Blogger.